পুজোর কথা ২০২৫/১৪৩২

পুজোর কথা
২০২৫/১৪৩২
সাকিন- পূর্বাচল শক্তি সঙ্ঘ
১৭ তম বর্ষ
কথাকার – দেবদত্ত গুপ্ত

প্রাককথন

বঙ্গ দেশের দুর্গা পুজো শিল্পময়। এই জল মাটির দেশের নানা আঙ্গিকের লোকশিল্পের সংযুক্তিই ছিল দুর্গা পুজো শিল্পের প্রধান পরিচয় বাহন। যদিও সময়ের নানা বদলের সাথে এই অভিমুখ বহমান নদীর মতো দিক বদল করেছে। ইতিহাসও তার নিবিড় পাঠ নিয়েছে ঘড়ির কাঁটার তালে তালে। আশির দশকে মূর্তি নির্মাণে সহসা এল এক হাত বদল। কুমোরটুলির আঙিনা ছেড়ে মূর্তি তৈরির ধারার হাত বদল হয়েছিল। যে কারণে পাল মশাইদের বদলে এই শহরের কিছু প্রথিতযশা শিল্পীদের নির্মাণ চিন্তায় রচিত হয় দুর্গার ভাব প্রতিমা। কিন্তু সেই শিল্পীদের যোগ কেবল মাত্র প্রতিমা নির্মাণ প্রসঙ্গকেই দর্পণে শরৎশশীর মতো প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেখানে দুর্গার গণ্ডী পার করা সম্ভব হয়নি।

এরপরে আশির দশক জুড়ে চলেছে রুচি বদলের নানা তোড়জোড়। যুক্ত হয়েছে শুদ্ধ ও সুস্থ নামক দুটি মাপকাঠি দুর্গা পুজোর ক্ষেত্র নির্মাণে। কিন্তু আজ আবার এক নতুন পরিসর। সরাসরি ভারতবর্ষের সমকালীন শিল্প চর্চার যে উত্তরাধুনিক দিক বদল, সেই শিল্পধারার পুজো মাঠে সংযুক্তিকরণ ঘটল। এই সংযুক্তি সরাসরি রচিত হতে চলেছে পূর্বাচল শক্তি সঙ্ঘের পুজো পরিসরে। স্টুডিয়ো এবং গ্যালারির প্রকোষ্ঠ নির্ভরতা ছাড়িয়ে শিল্পী পার্থ দাশগুপ্ত সমকালের এক ঝাঁক প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের শিল্পচর্চার নিদর্শন গণপরিসরে স্থাপন করলেন। ফলে এবারে দেখা গেল শিল্প প্রদর্শনের এক নয়া ক্ষেত্র পরিসর- ‘পুজো মাঠ’। স্টুডিয়ো নির্ভর চর্চা আর গ্যালারী নির্ভর শিল্প দর্শন নেমে এলো মুক্তাঙ্গনে। যেখানে ‘মাঠখোদাই কাঠখোদাই’ একটা শীর্ষ নাম বটে, কিন্তু অভিপ্রায় স্বাধীন শিল্পের পুজো।
শিল্প যাপনে পুজো পালন আলোকিত হোক। আগামীতে আলাপ জমে উঠবে বটেই।